মাস্টারি বিডি ডটকম
কক্সবাজার । ২৭ আগস্ট ২০১৭ । ১২ ভাদ্র ১৪২৪
বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী (বিজিবি) শনিবার সীমান্তে আরো ৭৩ জন রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিজিবি শতাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশে বাধা দিয়েছে।
এদিকে, রাখাইনে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯ জনে উন্নীত হয়েছে।
সরকারি সূত্রে বলা হয়, বিজিবি সদস্যরা শনিবার মিয়ানমারের ৭৩ জনেরও বেশি রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। ১৭৬ জন রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দেয়ার একদিন পর আবার এ সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছিল।
মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পথে বিজিবি সদস্যরা এখন সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
বিজিবি’র ব্যাটালিয়ন-২ এর কমান্ডার লে. কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম শনিবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা ৭৩ জন রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে ফিরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন গতকাল শনিবার রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।

জেলা প্রশাসক আলী হোসাইন বলেন, সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিজিবিকে সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, বাংলাদেশ তাদেরকে গ্রহণ করতে অক্ষম হওয়ায় দেশে ফিরে যেতে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে তাদের প্রতি মানবিক আবেদন জানাবে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। এতে বাংলাদেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে কোন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় না দেয়ার জন্য স্থানীয় জনগণের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে। তবে সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের সহিংসতায় আহত বেশকিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা শরনার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে আসা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে দু’জন মারা গেছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে শনিবার বিকেলেও গুলির শব্দ শোনা গেছে। মিয়ানমারের সামরিক সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ৮৯ জন মারা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৭৭ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। রাজ্যের রাখাইন বৌদ্ধরা চাকু লাঠি নিয়ে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালায়। ২০১২ সালের পর থেকে এই রাজ্যে ধর্মীয় সহিংসতা চলে আসছে। রাজ্যের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও হামলার শিকার হতে পারে, এমন আশংকায় ও গুজব ছড়িয়ে পড়ায় প্রাণের ভয়ে তারাও এখন ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যাচ্ছে। বুথন নামের একজন হিন্দু জানান, গ্রামে তাদের নিরাপত্তা নেই। ফলে তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে মিয়ানমারের জাতীয় নেত্রী অং সান সুকি শুক্রবার সকালে সহিংস ঘটনায় বিপুল সংখ্যক লোকের প্রাণহানিতে নিন্দা জানিয়েছেন। আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মীর (এআরএসএ) ব্যানারে একদল সশস্ত্র রোহিঙ্গা ৩০টি থানায় ও একটি সেনা ঘাটিতে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
আর মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে বেসামরিক লোকদের হত্যা ও ধর্ষনের অভিয়োগ উঠলেও বরাবরের মতো এবারেও সেদেশের কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বাসস
মাস্টারি সংবাদ মাস্টারি সংবাদে আপনাকে স্বাগতম